শীতের সন্ধ্যায় ভালোবাসা
শীতকালটা রূপার ভীষণ প্রিয়। হালকা কুয়াশার চাদর, গরম কফির ধোঁয়া, আর খামখেয়ালি শীতের হাওয়া—সব মিলিয়ে শীত যেন তার হৃদয়কে নরম করে দেয়। কিন্তু আজকের সন্ধ্যাটা যেন অন্যরকম। অফিস থেকে বের হওয়ার সময় মনে হচ্ছিল, কোথাও একটু শান্তি চাই, একটু গল্পের জায়গা। তাই হুট করে নিজের প্রিয় কফি শপে চলে এল সে।
কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে রূপার চোখ চলে গেল জানালার বাইরে। আকাশটা যেন তার মনের মতোই ফাঁকা, সেখানে একটুকরো আলো খুঁজে পাওয়া যায় না। এই ব্যস্ত জীবনে, ভালোবাসা বা জীবনের রঙ কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।
ঠিক এমন সময় একটা পরিচিত কণ্ঠস্বর তার পেছন থেকে ভেসে এল।
"রূপা? তুমি এখানে?"
সে ঘুরে তাকাল। আর চোখে পড়ে গেল আরিয়ানকে—তার কলেজের বন্ধু। সেই আরিয়ান, যার সঙ্গে একসময় জীবনের অজস্র স্বপ্ন বুনেছিল রূপা। কিন্তু সময়ের খেলা! কলেজের পর যোগাযোগ একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
"তুমি?" রূপার গলায় অবিশ্বাসের ছোঁয়া।
"হ্যাঁ, আমিই। এতদিন পর তোমার দেখা পেলাম। কেমন আছো?" আরিয়ান হাসল, সেই একই হাসি। রূপা দেখল, বছরগুলো পার হয়ে গেলেও সেই চেনা চোখ আর হাসির উষ্ণতা বদলায়নি।
আরিয়ান হেসে বলল, "কফি শপে দাঁড়িয়ে কফি না খেয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে কী করছো?"
"অফিস থেকে বেরিয়ে একটু সময় নিচ্ছিলাম। তুমি?"
"আমি? আমি তো এখানে শুধু কফি খাই না, স্মৃতিগুলো ফিরে পাই।"
দু’জনের কথায় যেন পুরনো দিনগুলো ধীরে ধীরে ফিরে আসতে লাগল। তখন আরিয়ান বলল, "চল, ভেতরে বসে একটু কথা বলি। অনেক গল্প জমে গেছে।"
কফি শপের ভেতরে বসে তারা কথা শুরু করল। কলেজের দিনগুলোর কথা, আড্ডা, মজার মুহূর্ত—সব কিছু যেন নতুন করে জীবন্ত হয়ে উঠল।
"তুমি কি জানো," আরিয়ান একটু থেমে বলল, "তোমাকে কলেজে দেখলেই একটা অদ্ভুত ভালো লাগত। সেই সময় তোমাকে বলার সাহস পাইনি।"
রূপার মুখটা হঠাৎ লাল হয়ে গেল। একটু চুপ করে থেকে সে বলল, "তুমি জানো না, আমিও তোমাকে পছন্দ করতাম। কিন্তু বলতে পারিনি।"
তাদের কথাগুলো যেন হঠাৎ থেমে গেল। চারপাশের কোলাহল যেন দু’জনের জন্য এক মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে গেল। আরিয়ান আস্তে করে রূপার হাতটা ধরল।
"তাহলে এবার? পুরনো ভুলটা কি আমরা ঠিক করতে পারি?"
রূপা এক মুহূর্ত চুপ করে থাকল। তারপর মৃদু হাসল। "দেখা যাক।"
part 2 coming...